হ্যাঁ যা বলছিলাম, গপ্পোর কথা। তা এই প্রথম গপ্পোটি একটি কৃষ্ণবর্ণ প্রাণীকে নিয়ে। আমাদের বিজ্ঞান সংস্থানের রাস্তায় চরে বেড়াতে দেখা যায়। এঁর প্রায় বৃষস্কন্ধ দেহ, নিমীলিত চোখ, তেলচুকচুকে গাত্র যেন মাছিও পিছলে যায়, অমাবস্যার রাত্রে ইনি সন্তর্পণে চলাফেরা করেন, সর্বোপরি পদক্ষেপণের মধ্যে রাজকীয় ভাবমূর্তি বিলক্ষণ বর্তমান। না না মোষটোষ নয়, ইনি মনুষ্যই বটে। বঙ্গীয় কোলাহল হতে মুক্ত হয়ে এইস্থলে এসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক, গীতিকাব্য, কাব্যনাট্য, সঙ্গীত, গণসঙ্গীত, মুজরা, দোপাট্টা, পেঁয়াজি ইত্যাদি হরেক বিষয়ে ইনি যাকে বলে রীতিমতো সুপন্ডিত। পোস্ট ইম্পিরিয়াল কবিতা থেকে শুরু করে শেক্সপীয়রের লেখায় সমকামিতার প্রভাব, খাটাপায়খানা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ কি বলেছেন, আলবেয়ার কামু ও চার্বাক দর্শন, গদ্যের কন্সট্রাকশন ও ডিকন্সট্রাকশন ইত্যাদি নিয়ে যদি আপনার মনে বিবিধ চিন্তার উদ্রেক হয় তবে সংকোচ না করে ছুটে যান ওঁর কাছে। ওঁর এই বিবিধ ক্ষমতাহেতু বাঙালী অবাঙালী নির্বিশেষে ইনি এখানকার সকলের পরিতাপহন্তারক ‘দাদা’। যা তা রকম ভাবে দাদা উচ্চারণ করলে হবে না। শেষদিকে একটু ক্লাসিকাল টান দিতেই হবে, অর্থাৎ দাদাআআআ। নইলে দেখবেন আলটপকা ভাবে উচ্চারিত হলে নিকোনো উঠোন জুড়ে খালি চোনা এসে পড়ছে।
দাদাআআআর মহিমা অপার। ঐসব কল্লোল কৃত্তিবাস সন্দীপন কমলকুমার এঁর কাছে তুশ্চু। ওঁরা ভেঙে গেছেন, দাদাআআআ গড়েন। ওঁদেরটা ডিফারেন্সিয়েশন, দাদাআআআ দস্তুর মতো ইন্টিগ্রেশন করেন। ওঁরা আনালিসিস করেছেন, দাদাআআর কাছে পাবেন সিন্থেসিস। পাবলো নেরুদার সাথে ২% জীবনানন্দ মিশিয়ে হালকা রবীন্দ্রনাথ ফ্লেভার দিলে কি জিনিস হয় দেখেছেন কখনো? জানতে হলে ওঁর সাথে মিশতে হবে। হুঁ হুঁ, দস্তুর মতো কেমিস্ট্রী ল্যাবে দাদাআআআ টেস্টটিউবে কবিতা বানান। লিটমাস লাল হলো তো রবীন্দ্রনাথের তলায় ঢেঁড়া মারেন, লিটমাস নীল হলো তো জীবনানন্দকে কেটে দিলেন, টেস্টটিউব ফেটে গেলে সেযাত্রায় শক্তি কে প্রায় পেয়েই গেছেন ভেবে আত্মহারা হন আর কিছুই না হলে ও জিনিস বিদেশী বলে চালিয়ে দেন। দোর্দন্ডপ্রতাপ ভারত সরকার অবধি এঁর ভীষণ গুণমুগ্ধ ভক্ত, তাই সন্মানের সঙ্গে পুষছেন যদিও আড়ালে লোকে কুৎসা করে থাকে। কিন্তু সেতো ভেতো বাঙালীর খুজলি মনের নমুনা মাত্র।
তো এহেন মহাপ্রাণের সাথে একবার অধমের মোলাকাত হয়েছিল। সেই কথা এবার খোলসা করে বলা যাক।
গত বছরের শুরুতেই নিধিরাম টাইপ কেউ একজন এসে আমায় ধরল, ‘আর তো পারি না বাওয়া, এবার তোমাকে ম্যাগাজিনের এডিটর হতেই হবে।’ আমি বল্লুম, ‘তা আমায় কেন, দাদাআআআ রে গিয়া ধর।’ সে বিষম মাথা নেড়ে বলল, ‘উঁহু উনি মেন প্লেয়ার, কোচ হতে চান না। আমরা একটি নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন কাম কোচ কাম মূর্খ খুঁজে বেড়াচ্ছি। তোমার পালোয়ানের মত চেহারা, তুমিই সামলাতে পারবে।’ বললে বিশ্বেস করবেন না, হঠাৎ কেমন প্যালারামের মতো চিন্তাভাবনা মনে এল। জন্ম ইস্তক আমারে কেউ ‘ফাস্টে’ ব্যাটিং করতে পাঠায়নি, চিরকাল লাস্টের দিকে রোল নাম্বার ছিল, জ্ঞান হওয়া মাত্র ‘আরেকবার সাধিলেই খাইব’ বলে এলুম, সেই আমাকেই কিনা হঠাৎ করে সাধাসাধি! আর পায় কে, দিলুম ঘাড়টি নেড়ে, আর পত্রপাঠ কে যেন হ্যান্ডবিলে নামধাম ছাপিয়ে সেসব ঘোষনা করে দিল। আমি ভাবলুম, কি আর হবে, আনন্দে থাকিব মস্তি করিব, মৎস্য ধরিব খাইব সুখে। শুভানুধ্যায়ীরাও উৎসাহ দিল, ‘এমন কি আর ব্যাপার! বড়জোর দশটা বানান ভুল আর পাঁচটা দাঁড়ি কমা কম থাকবে।’ সঙ্গে চেতাবনী, ‘কাগজপত্র গুলো শুধু যত্ন করে রেখ, তোমার যা ভুলো মন!’ তখন কি আর জানতাম, অধমকে লুটে দেওয়ার জন্য দেবী ঢাল তলোয়ার নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছেন!
দাদাআআআর মহিমা অপার। ঐসব কল্লোল কৃত্তিবাস সন্দীপন কমলকুমার এঁর কাছে তুশ্চু। ওঁরা ভেঙে গেছেন, দাদাআআআ গড়েন। ওঁদেরটা ডিফারেন্সিয়েশন, দাদাআআআ দস্তুর মতো ইন্টিগ্রেশন করেন। ওঁরা আনালিসিস করেছেন, দাদাআআর কাছে পাবেন সিন্থেসিস। পাবলো নেরুদার সাথে ২% জীবনানন্দ মিশিয়ে হালকা রবীন্দ্রনাথ ফ্লেভার দিলে কি জিনিস হয় দেখেছেন কখনো? জানতে হলে ওঁর সাথে মিশতে হবে। হুঁ হুঁ, দস্তুর মতো কেমিস্ট্রী ল্যাবে দাদাআআআ টেস্টটিউবে কবিতা বানান। লিটমাস লাল হলো তো রবীন্দ্রনাথের তলায় ঢেঁড়া মারেন, লিটমাস নীল হলো তো জীবনানন্দকে কেটে দিলেন, টেস্টটিউব ফেটে গেলে সেযাত্রায় শক্তি কে প্রায় পেয়েই গেছেন ভেবে আত্মহারা হন আর কিছুই না হলে ও জিনিস বিদেশী বলে চালিয়ে দেন। দোর্দন্ডপ্রতাপ ভারত সরকার অবধি এঁর ভীষণ গুণমুগ্ধ ভক্ত, তাই সন্মানের সঙ্গে পুষছেন যদিও আড়ালে লোকে কুৎসা করে থাকে। কিন্তু সেতো ভেতো বাঙালীর খুজলি মনের নমুনা মাত্র।
তো এহেন মহাপ্রাণের সাথে একবার অধমের মোলাকাত হয়েছিল। সেই কথা এবার খোলসা করে বলা যাক।
গত বছরের শুরুতেই নিধিরাম টাইপ কেউ একজন এসে আমায় ধরল, ‘আর তো পারি না বাওয়া, এবার তোমাকে ম্যাগাজিনের এডিটর হতেই হবে।’ আমি বল্লুম, ‘তা আমায় কেন, দাদাআআআ রে গিয়া ধর।’ সে বিষম মাথা নেড়ে বলল, ‘উঁহু উনি মেন প্লেয়ার, কোচ হতে চান না। আমরা একটি নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন কাম কোচ কাম মূর্খ খুঁজে বেড়াচ্ছি। তোমার পালোয়ানের মত চেহারা, তুমিই সামলাতে পারবে।’ বললে বিশ্বেস করবেন না, হঠাৎ কেমন প্যালারামের মতো চিন্তাভাবনা মনে এল। জন্ম ইস্তক আমারে কেউ ‘ফাস্টে’ ব্যাটিং করতে পাঠায়নি, চিরকাল লাস্টের দিকে রোল নাম্বার ছিল, জ্ঞান হওয়া মাত্র ‘আরেকবার সাধিলেই খাইব’ বলে এলুম, সেই আমাকেই কিনা হঠাৎ করে সাধাসাধি! আর পায় কে, দিলুম ঘাড়টি নেড়ে, আর পত্রপাঠ কে যেন হ্যান্ডবিলে নামধাম ছাপিয়ে সেসব ঘোষনা করে দিল। আমি ভাবলুম, কি আর হবে, আনন্দে থাকিব মস্তি করিব, মৎস্য ধরিব খাইব সুখে। শুভানুধ্যায়ীরাও উৎসাহ দিল, ‘এমন কি আর ব্যাপার! বড়জোর দশটা বানান ভুল আর পাঁচটা দাঁড়ি কমা কম থাকবে।’ সঙ্গে চেতাবনী, ‘কাগজপত্র গুলো শুধু যত্ন করে রেখ, তোমার যা ভুলো মন!’ তখন কি আর জানতাম, অধমকে লুটে দেওয়ার জন্য দেবী ঢাল তলোয়ার নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছেন!
No comments:
Post a Comment