Tuesday, 3 April 2012

রোজনামচা ২


তো, আরো একটা বিকেল শেষ হলো। কিছু নির্লিপ্ত ছেলেমেয়ে ধীর পায়ে বেরিয়ে গেল ক্লাসরুম ছেড়ে। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বোর্ডে একপ্রস্থ জমি তৈরী করলাম। আধখ্যাঁচড়া ইকোয়েশন মুছে গিয়ে শূন্য চৌকো বক্স। ভেরিয়েবল্‌স গুলোর আদ্দেকটা উড়ে গেছে। সন্ত্রস্ত। জমির উপর হালকা চকের আস্তরণ।

প্রথমে একটা বাড়ী তৈরী হল। কোন রকম স্থাপত্য নকশা না মেনে অবশ্যই। পাশে সারিসারি বেড়া। যথাক্রমে তার পাশে গাছ। সামনে ঢেউ খেলানো নদীবিশেষ। এবং নৌকো। সূর্য অস্ত যাচ্ছে। আকাশে দুটো অসমঞ্জস পাখি। কিন্তু কী যেন নেই? ও হ্যাঁ মনে পড়েছে, একটা বাঁকা হাতে লেখা ভেরিগুড’, সিগনেচার, ডেট।

সটান সবকিছু মুছে দিয়ে আড়চোখে দেখলুম জানালার ওপাশে ওরা দাঁড়িয়ে। চাবির রিং দুলছে। মৃদু গুঞ্জন। মানিব্যাগের ভেতর আইডেন্টিটি কার্ড। মোটা মানুষ, রোগা মানুষ, সরু মানুষ, লম্বা মানুষ, কত মানুষ...।

—‘চা খেতে যাবে না তিতাসদা?’

হ্যাঁ, তাই তো। আমি তো চা খেতে যেতেই পারি। কেন নয়? কি হবে আর ভেবে। যা গেছে তা গেছে।

লঘুপায়ে শ্লথ গতির পাজোড়া টেনে টেনে নামতে থাকি মাটিতে। কাঁচঘেরা গোল্ডেন কোয়াড্রাঙ্গেলের পাশ দিয়ে, সিঁড়ি বেয়ে একপা দুপা। ক্রমশঃ বহু পা। ছন্দ মিলিয়ে হাঁটি। চোখের ভেতরে নিভৃত চোখে দেখি আরো কত চঞ্চল চোখ, কত চঞ্চল স্বর। ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট স্ন্যাপশটস...
একটাআআআ বাজিল, এখনো কুমির এল না।
দুউউউটোওওও বাজিল, এখনো কুমির এল না।
তিনটেএএএ বাজিল, এখনো কুমির...

No comments:

Post a Comment